চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার ৮ টি উপায়

 

চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার সম্পর্কে আপনি কি জানতে চান ? কারি পাতা ব্যবহার করে কি ভাবে চুল লম্বা করা যায় জানেন কি ? না জেনে থাকলে আমাদের আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে নেন ।


কারন আমরা আজ আলোচনা করবো চুলের যত্নে কারি পাতার নানাবিধ ব্যবহার সম্পর্কে ।সেই সাথে আরও আলোচনা করবো ত্বক ও চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যবহারের উপকারিতা সম্পর্কে । চলুন দেরি না করে আলোচনা শুরু করা যাক । 

পোস্ট সূচিপত্র : চুলের যত্নে কারি পাতার কার্যকরী ৮ টি উপায়

চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যবহারের উপকারিতা 

চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যবহারের উপকারিতা অনেক । সেই প্রাচীন কাল থেকে চুলের যত্নে কারি পাতা নানান ভাবে ব্যবহার করে আসছে । কিন্ত চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার আমাদের অনেকের অজানা। চলুন কথা না বাড়িয়ে চুলের যত্নে কারি পাতার উপকারিতা সম্পর্কে আপনাকে জানিয়ে দিই --


  • কারি পাতা চুল পাকা রোধ করে ঃ আপনারা যারা অল্প বয়সে চুল পাকার সমস্যায় ভুগছেন তারা আজ থেকেই চুলে কারি পাতার ব্যবহার শুরু করেন । আপনি কারি পাতার সাথে পেঁয়াজের রস মিশিয়ে এই প্যাক আপনার চুল ব্যবহার করুন । এতে আপনার চুল থাকবে কালো এবং সেই সাথে আপনার বয়স ধরে রাখতেও সাহায্য করবে ।
  • চুল পড়া রোধ করে কারি পাতা ঃ চুল পড়া বর্তমানে সকলেরই একটি সাধারন সমস্যা । এই চুল পড়া থেকে মুক্তি পেতে আপনি কারি পাতা দুধের সাথে মিশিয়ে একটি ঘন পেস্ট তৈরি করুন । এই পেস্টটি আপনার চুলে ভালো করে লাগান ।চুলে লাগানোর এক দুই ঘণ্টা পর চুল শ্যাম্পু  করে ধুয়ে ফেলুন । এভাবে নিয়মত ব্যবহার করলে আপনি চুল পড়া সমস্যা থেকে পরিত্তান পেতে পারেন ।
  • কারি পাতা বাবহারে চুল ঝলমল করেঃ কারি পাতায় রয়েছে অ্যান্টি এক্সিডেন্ট যা রুক্ষ শুষ্ক চুলকে করে তোলে প্রাণবন্ত এবং ঝলমলে । যার ফলে শুধু কারি পাতা পেস্ট করে চুলে লাগালেও আপনি পাবেন ঝলমলে চুল ।
  • কারি পাতা খুশকি দূর করে ঃ কারি পাতায় রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল , অ্যান্টি ফাঙ্গাল , অ্যান্টি ইনফ্লেয়ামেতরি বৈশিষ্ট যা আপনার মাথার ত্বকের খুশকি বা বিভিন্ন ধরনের সংকান্ত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে । তাছাড়া আপনার মাথার ত্বকে ফাঙ্গাসজনিত সংক্রমন খেকে রক্ষা করতে কারি পাতা কার্যকরী ।
  • কারি পাতা চুল বৃদ্ধি করেঃ প্রতিদিন নিয়ম করে কারি পাতা ব্যবহার করলে এটি আপনার চুল বৃদ্ধিতে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে । আপনি কিছু কারি পাতা রোদে শুকিয়ে গুড়ো করে এক টেবিল চামচ দইয়ের সাথে মিশিয়ে ,সেটি আপনার চুলের গোঁড়ায় ভালো করে লাগান । এভাবে কিছু দিন ব্যবহার করলে আপনার মাথার চুল এমনিতেই বৃদ্ধি পাবে তারাতারি ।
  • কারি পাতা চুলের আগা ফাটা প্রতিরোধ করেঃ আপনার ঘন ,কালো ,লম্বা চুল থাকার পরেও যদি চুলের আগা ফাটার সমস্যা থেকে থাকে তাহলে সেটি দেখতে বেশ বিব্রতকর লাগে । চুলের এই আগা ফাটা দূর করতে আপনি নিয়মিত কারি পাতা বেটে আপনার চুলে লাগান  ।এভাবে কিছুদিন ব্যবহারের পর , লক্ষ করবেন আস্তে আস্তে আপনার চুলের আগা ফাটা অনেকটাই কমে যাবে।
  • চুলের গ্রন্থিকোষ মজবুত করে ঃ কারি পাতার রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমানে অ্যামিনো এসিড যা আপনার চুলের কোষ গ্রন্থিকে মজবুত এবং শক্তিশালী করে তোলে ।
  • চুল পাতলা হওয়া রোধ করে ঃ প্রোটিন এবং বিটা ক্যারোটিন একটি দুর্দান্ত উৎস হল কারি পাতা । আর এই দুটি উপাদানই আপনার চুল পড়া ও চুল পাতলা হওয়া  প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে ।

কারি পাতা এবং টক দই এর হেয়ার প্যাক 

চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যবহার করতে আপনি টক দই এবং কারি পাতা একসাথেও ব্যবহার করতে পারেন। কারন টক দই এ রয়েছে ল্যাক্তিক এসিড যা আপনার স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং চুলের উজ্জলতা বৃদ্ধি করে । আর তাই কারি পাতা এবং টক দই এর হেয়ার প্যাক চুলে মাজিকের মত কাজ করে । এবার চলুন এই হেয়ার প্যাকটি আপনি কিভাবে তৈরি করবেন তা জেনে নিন--
 
প্রয়োজনীয় উপকরনঃ 
  • কারি পাতা --এক মুঠো পরিমান এবং 
  • টক দই -৩-৪ চা টেবিল চামচ । 

 প্রস্তুত প্রণালী ও ব্যবহারঃ

প্রথমে আপনি কারি পাতা গুলো ব্লেলেণ্ডারে ব্লেন্ড করে একটি পেস্ট করে তৈরি করে ফেলুন । এরপর ১ চা চামচ কারি পাতার পেস্টের সাথে ৩-৪ চা চামচ দই মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন ।এতওপর হেয়ার মাস্কটি  আপনার মাথার ত্বকে এবং চুলে ভালো মত মেসেজ করে লাগিয়ে ফেলুন ।

 
এমন ভাবে লাগাতে হবে যেন এই প্যাকটি আপনার চুলের গোঁড়া থেকে আগা পর্যন্ত সম্পূর্ণ চুল এই পেস্টের আবরনে ধেকে যায় ।এভাবে ৩০ মিনিট রাখার পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ।এই হেয়ার প্যাক তৈরির ক্ষেত্রে আপনি চাই লে বিকল্প হিসেবে টক দই এর পরিবর্তে দুই টেবিল চামচ দুধও ব্যবহার করতে পারেন ।
বাবহারের সময়সীমাঃ
  • টক দই এবং কারি পাতার এই হেয়ার প্যাকটি  আপনি যদি প্রত্যেক সপ্তাহে একবার ব্যবহার করবেন । এতে করে ভালো ফল পাবেন । 

চুলের যত্নে কারি পাতার এই হেয়ার প্যাকটি আপনার বাবহারে আপনার চুল হয়ে উঠবে প্রাণবন্ত, উজ্জল এবং ঝলমলে ।

চুলের যত্নে হেয়ার টনিক হিসেবে কারি পাতার তেল  

চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার অনেকটা হেয়ার টনিক হিসেবে কাজ করে । আপনি নারিকেল তেলের সাথে কারি পাতা মিশিয়েই তৈরি করে নিতে পারেন এই হেয়ার টনিক । এই হেয়ার টনিক ব্যবহারের ফলে আপনার চুলের আদ্রতা যেমন দূর হবে তেমনি এটি আপনার চুলের গোঁড়া থেকে মজবুত এবং শক্তিশালী করে তুলবে । তো চলুন এই নহেয়ার টনিক আপনি কি ভাবে তৈরি করবেন তা জেনে নিন --
 
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
  • কারি পাতা --১০ টি তাজা কারি পাতা এবং 
  • নারিকেল তেল --৫ চা চামচ 

প্রস্তুত প্রণালী ও বাবহারঃ

  • প্রথমেই আপনি একটি পরিস্কার পাত্র নিন। এবার পাত্রে নারিকেল তেল ঢালুন এবং তার সাথে কারি পাতা গুলো যোগ করুন।
  • পাতার চারপাশ যতক্ষণ না পর্যন্ত কালো বর্ণের হবে ততক্ষণ পর্যন্ত ভালো করে নারতে থাকুন 
  • অতঃপর পাটাড় চারপাশ কালো হয়ে এলে চুলার আঁচ বন্ধ করুন এবং মিশ্রণটি কিছু সময়ের জন্য ঠাণ্ডা হতে রেখে দিন ।
  • ব্যাস টনিকটি ঠাণ্ডা হয়ে গেলে আপনি শুধু মাত্র তেল গুলো পাতা থেকে ছেঁকে নিন এবং আপনার মাথায় লাগান ।
  • এবারে এই তেল আঙ্গুলের অগ্রভাগে লাগিয়ে আপনার মাথার ত্বকে এবং চুলের গোঁড়া থেকে আগা পর্যন্ত আস্তে আস্তে ভালো  করে ম্যাসাজ করুন ।
  • ম্যাসাজ শেষ হওয়ার পর প্রায় এক ঘণ্টা এই তেলটি আপনার মাথায় রাখুন এবং এক ঘণ্টা পর ঠাণ্ডা পানিতে শ্যাম্পু করে আপনার চুল ধুয়ে ফেলুন ।

হেয়ার টনিক বাবহারের সময়সিমাঃ

ভালো ফলাফল পেতে আপনি সপ্তাহে ২-৩ বার আপনার মাথার ত্বকে এই তেল ব্যবহার করুন এবং প্রতিবার লাগানোর পর চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন । নিয়মিত ব্যবহারে এই হেয়ার টনিক আপনার চুল বৃদ্ধিতেও বিশেষ ভাবে সাহায্য করবে ।

হেয়ার টনিক ব্যবহারে র ক্ষেত্রে সতর্কতাঃ

  • হেয়ার টনিক তৈরির সময় আপনি চুলা থেকে নিরাপদ দূরুত্ত বজায় রাখবেন। কারন কারি পাতা যখন নারিকেল তেলে ভাজতে থাকবেন তখন পাত্র থেকে তেল ছিটকে আসার সম্ভাবনা থাকে ।
  • আপনার স্কাল্পে যদি গুরুতর কোন সমস্যা থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই এই তেল সেবন করবেন ।

কারি পাতা ব্যবহার করে কিভাবে চুল লম্বা করা যায় 

কারি পাতা কোন উপায়ে ব্যবহার করে চুল লম্বা করা যায় তা আমাদের অনেকের অজানা । আর লম্বা ঘন এবং ঝলমলে চুলকে না কে চায় বলুন তো । আপনি যদি লম্বা ঘন এবং ঝলমলে চুল চান তাহলে কারিপাতার এই আয়ুর্বেদিক মিশ্রণ টি ব্যবহার করতে পারেন। এটি নিয়মত ব্যবহারের ফলে আপনার চুল প্রাকৃতিকভাবে একদিকে যেমন লম্বা হবে 

তেমনি চুল পরার প্রবনতা অনেকটাই কমে যাবে ।তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে চুলের যত্নে এই আয়ুর্বেদিক মিশ্রণটি আপনি কিভাবে তৈরি করবেন তা জানিয়ে দিচ্ছি --
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ 
  • বিটের খোসা 
  • কারি পাতা 
  • আমলকী  
  • এক টুকরো আদা এবং
  • পানি । 

প্রস্তুত প্রণালীঃ

  • আপনি প্রথমে বিট থেকে খোসা গুলোকে টুকরো টুকরো করে কেটে নিন  ।
  • এরপর কেটে রাখা বিটের খোসার সাথে সতেজ এক মুঠো কারি পাতা , আমলকী , এক তক্র আদা এবং পরিমান মতো পানি মিশিয়ে এক সাথে ব্লেলেন্ডাড়ে ব্লেন্ড করে একটি পেস্ট তৈরি করে নিন ।ব্লেন্ডার না থাকলে আপনি শীল পাটাতেও বেটে নিতে পারেন । 
  • ব্যাস মিশ্রণটি তৈরি হয়ে গেলে একটি ছাঁকনি দিয়ে বা পরিস্কার পাতলা কাপরের সাহায্যে ছেঁকে এর নির্যাস টুকু বের করে নিন। আমলকী ,বিত,এবং আদার এই নির্যাস আপনার চুলের গোঁড়ায় নিয়মিত লাগাতে থাকুন এবং পরের দিন সকালে চুল ধুয়ে ফেলুন । 
  • যা হোক বিট এবং আমলকী থেকে পাপ্ত এই পেস্ট আপনার চুলে ভালো করে ম্যা সাজ করে লাগান এবং এক ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন ।এক ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন ।
  • আমলকী, বিটের এই আয়ুর্বেদিক মিশ্রণটির নিয়মিত ব্যবহার আপনার চুলকে একদিকে যেমন মজবুত এবং ঝলমলে করে তুলবে ।অন্যদিকে আদার ব্যবহার আপনার চুলকে লম্বা করতেও সহায়তা করবে । 

 আরো পড়ুনঃ মানব দেহে শসা খাওয়ার উপকারিতা

চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যবহার করে কিছু দিনের মধ্যে আপনি পেতে পারেন লম্বা চুল । এটি নিয়মিত বাবহারের ফলে আপনার চুল প্রাকৃতিকভাবে একদিকে যেমন লম্বা হবে তেমনি চুল পড়ার প্রবনতাও অনেকটা কমে যাবে । 

চুলের যত্নে কারি পাতার জল 

চুলের যত্নে কারি পাতার জল ও  বেশ উপকারি । আপনার চুল যদি ফ্রিজি বা রুক্ষ হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে কারি পাতার জল আপনার চুলে ব্যবহার করতেই পারেন । এখন আপনি নিশ্চয়ই ভাবছেন কারি পাতার জল আবার কিভাবে চুলে ব্যবহার করবেন । সন্মানিত পাঠক এই কারি পাতার জল আপনি কিভাবে তৈরি করবেন তা জানিয়ে দিই --
প্রয়োজনীয় উপকরনঃ
  • জল এক কাপ পরিমান এবং
  • এক মুঠো পরিমান কারি পাতা । 

প্রস্তত প্রনালিঃ 

  • কারি পাতার জল তৈরি করার জন্য আপনি প্রথমেই একটি পরিস্কার প্যান নিন ।
  • অতঃপর পরিস্কার পাত্রে এক কাপ পরিমান জলের সাথে এক মুঠো টাটকা কারি পাতা মিশিয়ে চুলার হাল্কা আঁচে ভালো করে ফুটিয়ে নিন।
  • জল ফুটানো হয়ে গেলে সবশেষে এক কাপ জল আক্তিপরিস্কার ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নিন এবং একটি স্পে বোতলে করে সংরক্ষণ করুন ।
  • ব্যাস তৈরি হয়ে গেল কারি পাতার জল এবং আপনি আপনার ফ্রিজিং চুলে নিয়মিত এই জল ইস্প্রে করে ব্যবহার করুন ।এতে করে আপনার চুলের ফ্রিজিং অনেকটাই কমে যায় ।

ত্বকের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার

 চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার সম্পর্কে আপনাকে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছি । শুধু চুলের যত্নে নয় বরং ত্বকের যত্নেও কারিপাতা বাব্যহিত হয়ে আসছে সেই সুপ্রাচীনকাল থেকে । চটজলদি আপনার জেল্লা ফেরাতে কারি পাতা দারুন কাজ করে । কিন্ত কিভাবে আপনি ত্বকের যত্নে কারি পাতা ব্যবহার করবেন ? এবার আপনাদের জানাবো ত্বকের যত্নে কারি পাতা ও হলুদের ফেসপ্যাক গুলো জেনে নিন--
 
কারি পাতা ও হলুদের ফেসপ্যাকঃ কারি পাতা এবং হলুদের গুড়ো দিয়ে তৈরি ফেসপ্যাকটি আপনার ত্বকের জন্য হতে পারে একটি প্রাকৃতিক আয়ুর্বেদিক ফেসপ্যাক । এবার জেনে নিন কিভাবে তৈরি করবেন এই ফেসপ্যাকটি --
 
প্রয়োজনীয় উপকরনঃ
  • কারি পাতা ১০ - ১২ টি এবং 
  • হলুদ গুড়ো --২ চা চামচ 

প্রস্তুত প্রণালী ও বাবহারঃ প্রথমে কারি পাতা গুলো পরিস্কার করে ধুয়ে নিন । তারপর এর সাথে ২ চা চামচ হলুদ গুড়ো ভালো করে মিশিয়ে একটি ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে একটি পেস্ট তৈরি করুন । পেস্ট তৈরি হয়ে গেলে এটি ২০ - ২৫মিনিট আপনার মুখে লাগিয়ে রাখুন .২০ -২৫ মিনিট পড়ে পেস্ট টি শুকিয়ে গেলে মুখ ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ।কারি পাতা এবং হলুদের এই ফেস প্যাকটি আপনি সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ দিন ব্যবহার করুন। এতে ভালো ফলাফল পাবেন । 

চুলের  যত্নে কারি পাতার তৈরি চা

চুলের যত্নে কারি পাতার নানাবিধ ব্যবহার রয়েছে । কারি পাতার চা এটি শুনে আপনি নিশ্চিত অবাক হয়েছেন । শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এই কারি পাতার চা আপনার চুলকে ভালো রাখতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে । আপনার চুল কি ঝরে যাচ্ছে ? কি চুলের খুশকির সমস্যায় ভুগছেন ? আপনার চুলে কি খুব বয়সেই প্যাক ধরেছে ।
 
 আপনার কি চুল পড়ে মাথায় টাক পরতে শুরু করেছে ? এক কথায় বলতে গেলে রুক্ষ শুষ্ক চুল নিয়ে ভীষণ চিন্তিত এবং উদ্বিগ্ন ? আপনি কি জানেন আপনার চুলের এইসব সমসার সকল সমাধান লুকিয়ে রয়েছে কারি পাতার চা য়ে । এখন হয়তো ভাবছেন কারি পাতার চা কিভাবে খেতে হয় ?
 
 সন্মানিত পাঠক , আপনি কয়েকটি কারি পাতা জলে ফুটিয়ে নিয়ে তাতে সামান্য লেবুর রস এবং স্বাদ মতো চিনি যোগ করে তৈরি করে ফেলুন কারি পাতার চা । এভাবে এক টানা ৭ দিন কারি পাতার চা খেতে থাকুন । এতে আপনার চুলের সকল সমসা নিমিষেই গায়েব হয়ে যাবে  ।

 চুলের যত্নে আরও কিছু কারি পাতার ব্যবহার

চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার এর আরো কিছু উপায় রয়েছে। কারি পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি যা আপনার চুলকে অকালপক্কতা রক্ষা করে । তাছাড়া কারি পাতা প্রোটিন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি আপনার চুলের খুশকি দূর করতে এবং চুল পড়া কমাতে সহায়তা করে। 
ইতিমধ্যেই চুলে কারি পাতার কথা ব্যবহারের বেশ কয়েকটি উপায় সম্পর্কে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি। এবার চলুন আপনি আরো কি কি উপায়ে চুলে কারি পাতা ব্যবহার করতে পারেন তা জানিয়ে দিই --
চুলে পেঁয়াজ ও কারি পাতার ব্যবহার আপনার চুল পড়া বন্ধ করতে পেঁয়াজ ও কারি পাতার তৈরি প্যাক বেশ কার্যকর ভূমিকা আছে । পেঁয়াজ ও কারি পাতার প্যাক আপনি কিভাবে তৈরি করবেন চলুন জেনে নিন --
প্রয়োজনীয় উপকরণ 
  • পেঁয়াজ একটি এবং 
  • কারি পাতা 
 প্রস্তুত প্রণালী ও ব্যবহারঃ প্রথমে আপনি পেঁয়াজের খোসা ছাড়িয়ে নিন । খোসা ছাড়ানো হলে এর সাথে এক মুঠো সতেজ টাটকা কারি পাতা একসাথে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে একটি পেস্ট বা মিশ্রণ তৈরি করেন । এরপর কারি পাতা এবং পিয়াজ থেকে তৈরিকৃত পেস্ট বা মিশ্রণটি একটি পরিষ্কার পাতলা মুসলিম কাপড় বের করে ছেঁকে  নিন ।
 
এবার এই রসে তুলা চুবিয়ে আস্তে আস্তে আপনার চুলের গোড়ায় ভালো করে মাসাজ করে লাগান এবং ৩০ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করুন ৩০ মিনিট পর আপনি আপনার চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। 
 
 
মেথি পাতা কারিপাতা ও আমলকি পাতার ব্যবহারঃমেথি পাতা কারি পাতা এবং আমলকির প্যাক চুলের ক্ষেত্রে অনেকটা ম্যাজিকের মত কাজ করে । এ ক্ষেত্রে আপনি ঠিক আগের মতই আধা কাপ পরিমান মেথি পাতা কারিপাতা ও আমলকি একসাথে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে একটি পেস্ট তৈরি করে ফেলুন ।

 এই পেস্টিট আপনার চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত সম্পূর্ণ চুল ভালো করে লাগিয়ে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন ৩০ মিনিট পর মাইল শ্যাম্পুতে আপনার চুল ধুয়ে ফেলুন এবং চুলের কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। 
 
কারি পাতা ও অ্যালোভেরা ব্যবহারঃ দিন দিন আপনার চুল কি পাতলা হয়ে যাচ্ছে ? আপনি চুলের ঘনত্ব বাড়াতে চাইলে কারি পাতার পেস্ট এবং অ্যালোভেরা জেল একত্রে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে এই পেস্টি  আপনার চুলে লাগান এবং চুলে লাগিয়ে এক ঘন্টা অপেক্ষা করুন ।এক ঘন্টা পর শ্যাম্পু করে আপনার চুল ধুয়ে ফেলুন । 
 
এভাবে কিছুদিন নিয়মিত ব্যবহার করলে আপনার চুলের ঘনত্ব বাড়বেই । চুলে যত্নে কারি পাতা ব্যবহারের উপায় হিসেবে আপনি আপনার সুবিধামতো উপযুক্ত যেকোনো একটি ব্যবহার করতে পারেন । নিয়মিত ব্যবহারে আপনার চুল হবে কোন ঝলমলে এবং উজ্জ্বল।

ঘন কালো চুল পেতে খাদ্য তালিকায় যোগ করুন কারি পাতা 

ঘন কালো চুল পেতে খাদ্য তালিকায় যোগ করুন কারি পাতা।কারণ আপনি আপনার দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় যা গ্রহণ করবেন অর্থাৎ আপনার শরীর যা গ্রহণ করবে আপনার চুলেও সেটি গ্রহণ করবে ।
 
চুল ঝরে পড়া এবং ঘন কালো চুল পেতে আপনি আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যোগ করতে পারেন ।রোজগার খাবারের সাথে আপনি কারি পাতা কিভাবে খেতে পারেন চলুন তা জানিয়ে দিই --
  •  কারি পাতা রোদে শুকিয়ে চিঠি দিয়ে পাউডার তৈরি করে সেটি তরকারি কিংবা ভাতের সাথে খুব সহজেই মিশিয়ে খেতে পারেন। 
  • তাছাড়া আপনি কুচি কুচি করে পুদিনা পাতায় এবং কারি পাতার মিশ্রণের সাথে বাটার মিল্ক বা দুধ মিশিয়েও খেতে পারেন ।
  • আবার আপনি কিছু কারি পাতা ভেজে নিয়ে তার  মধ্যে সিদ্ধ করা বিভিন্ন ধরনের সবজি মিশিয়েও খেতে পারেন এভাবে খেলে আপনার রোজকার একঘেয়ে খাবারের একটি নতুন ঘ্রাণ যুক্ত হয় কারণ কারি পাতার একটি সুন্দর নিজস্ব গন্ধ রয়েছে যা ক্ষুধা বাড়ানোর উপাদান হিসেবে কাজ করে এবং এটি আপনার চুলের উপকারও আসে 

কারি পাতা ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা 

যদিও কারি পাতা ব্যবহারে তেমন কোনো অপকারিতা নেই বললেই চলে । তবুও প্রত্যেকটি জিনিস ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা মেনে চলা উচিত । কারি পাতা ব্যবহারের ক্ষেত্রেও নিম্নলিখিত সতর্ক সতর্কতা গুলো মেনে চলার চেষ্টা করবেন । যেমন --
  • এলার্জি সমস্যা রয়েছে কারি পাতার এই পেস্ট ব্যবহারের ফলে ত্বকে এলার্জির উপগ্রহ হতে পারে। তাই  মাথার ত্বকের কারি পাতা লাগানোর পূর্বে খানিকটা আপনার ত্বকে লাগিয়ে পরীক্ষা করে নিন তাতে অ্যালার্জির কোন সমস্যা দেখা দিচ্ছে কিনা ।
  • কারি পাতা তেল ব্যবহারের ফলে অনেকে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি হয় যাদের এই সমস্যা হবে তাদের কারি পাতা ব্যবহার না করাটাই উত্তম । 
  • কারি পাতার বীজ কখনো ভক্ষণ করবেন না কারণ এই বিষ অনেক বিষাক্ত হয়ে থাকে ।
সম্মানিত পাঠক মনে রাখবেন একেক মানুষের চুলের প্রকৃতি একেক রকম হয়ে থাকে । কারি পাতা ব্যবহার করে কিভাবে আপনি চুল লম্বা করবেন তা অনেকগুলো উপায় রয়েছে । সুতরাং আপনার চুলের চাহিদা অনুযায়ী আপনি কারি পাতা ব্যবহার করবেন কি করবেন না সে সিদ্ধান্ত একান্তই আপনার ।

কারি পাতার ব্যবহার সম্পর্কে আমার মন্তব্য 

চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার আপনারা নিশ্চয়ই এতক্ষণে আমার আর্টিকেল পড়ে জানতে পেরেছেন । অনেকেই আছেন যারা চুলে অনেক দামি হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করে । আবার অনেকেই চুলের যত্নে ভরসা করেন বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক উপাদান । সেই হিসেবে প্রাকৃতিক উপাদানের মধ্যে প্রথমে উঠে আসে কারি পাতার নাম কারি পাতার এবং মধ্যে এমন সব উপাদান রয়েছে যা আপনার চুল এবং স্কাল্পের যত্ন নেই ।
 







 
 
 

 


 


 



 



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বৃষ্টি ২৪ নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url