চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থান ও ঐতিহাসিক স্থাপনা

বিদ্যুৎ বিল বের করার নিয়ম বাংলাদেশের  উত্তরাঞ্চলের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ মডেল পৌরসভা হিসেবে পরিচিত। এই জেলার রূপ মুগ্ধ করার মত। ছোট্ট জেলায় পরিবেশ প্রাকৃতিক পরিবেশ সবারই নজর কারে । চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলার ১০ টি দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে নিচে দেওয়া হল।

অনেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাকে আমের শহর বা আমের দেশ বলেও জানে। এ জেলায় বাংলাদেশের মোট উৎপাদিত আমের একটি বড় অংশ উৎপাদিত হয়। যার ফলে একে আমের রাজধানী বলা হয়।চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থান ও ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল। 

পেজ সুচিপত্রঃ চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থান ও ঐতিহাসিক 

 সোনামসজিদ তোহাখানা নাচোল রাজবাড়ি শাহ রহমাতুল্লাহর মাজার কানসাট আম বাজার স্বপ্নপল্লী দারাজ বাড়ী মসজিদ রোহনপুর নওগাঁ উরুজ মহানন্দা নদী বাবুডাইং ও কানসাটের জমিদার বাড়ি

চাঁপাইনবাবগঞ্জের দর্শনীয় স্থান ও ঐতিহাসিক স্থাপনা 

ছোট সোনা মসজিদ 

হ্যাপি বিভাগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের সুলতানি স্থাপত্যের রত্ন হিসেবে আখ্যায়িত ছোট সোনা মসজিদ অবস্থিত 

ছোট ছোট মসজিদের প্রধান প্রবেশ পথের উপরে স্থাপিত শিলালিপি থেকে জানা যায় ১৪৯৩ থেকে ১৫১৯ সালের মধ্যে সুলতান হোসাইন শাসনকালে জৈনাক মনসুরওয়ালি মোঃ বিন আলী ছোট সোনা মসজিদটি নির্মাণ করেন প্রচলিত আছে একসময় মসজিদের গম্বুজ গুলো সোনা দিয়ে মোড়ানো ছিল এবং সে কারণে মসজিদটিকে সোনামসজিদ হিসেবে পরিচিতি পায় আর বাংলাদেশ ভারত সীমান্তের কাছে ভারতে আয়তনে অনেক বড় সোনা মসজিদ থাকায় এই মসজিদটির সকলের কাছে ছোট সোনা মসজিদ নামে প্রসিদ্ধ হয়ে ওঠে মসজিদের সামনে আঙ্গিনা পশ্চিম থেকে পূর্বে ৪২ মিটার এবং দক্ষিণ থেকে উত্তরে 43 পয়েন্ট পাঁচ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত 

ছোট সোনা মসজিদে গাই নাইটের টালি ব্যবহৃত হয়েছে সুলতানি স্থাপিত শৈলীতে নির্মিত ছোট মসজিদে ইটের তৈরি বারোটি গম্বুজ রয়েছে আর মসজিদের চারপাশের দেওয়াল প্রায় ছয় ফুট চওড়া এবং ভেতর ও বাহিরে পাথরে টালি দিয়ে আবৃত মসজিদের চার কোনায় চারটি আটখানা মিনার রয়েছে এবং দক্ষিণে ও উত্তর দিকে তিনটি করে ছয়টি কিনা প্রবেশপথ রয়েছে পূর্ব দিকের প্রবেশপথে সদা সুজি পশ্চিম দিকে দেয়ালে নকশা খচিত পাঁচটি মেহরাব আছে 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলা শাহবাজপুর ইউনিয়নে ঐতিহ্যবাহী মোঘলখানা কমপ্লেক্স এর অবস্থান চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে তোয়াখানা দূরত্ব প্রায় 35 কিলোমিটার ফার্সির শব্দ সোহাখানার অর্থ ঠান্ডা ভবন বা প্রাসাদ মুঘল সম্রাট শাহজালালের পুত্র সুলতানসা সুজা তার মুর্শিদ সৈয়দ নেয়ামত নেমতুল্লাহ শীতকালীন বসবাসের সুবিধার্থে ফিরোজপুরে তাপ নিয়ন্ত্রিত তিন তলা বিশিষ্ট এই পাশেরটি নির্মাণ করেন বিভিন্ন ঐতিহাসিক সূত্র মতে ১৬৩৯ থেকে ১৬৫৮ খ্রিস্টাব্দে এই তো এখনো নির্মিত হয় সাহায্য যা তোয়াখানায় অবকাশ যাপনের জন্য আসলে ইমারতের মাঝামাঝি একটি সুপ্ প্রশস্ত কক্ষে অবস্থান করতেন তাখানা কমপ্লেক্সের ভিতরে বেশ কিছু নাম না জানা সমাধি রয়েছে এগুলো হযরত সৈয়দ নেয়ামত উল্লার খাদেম বা সহচর বলে মনে করা হয় কমপ্লেক্সের মধ্যে আরো আছে তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ খুব এবং একটি গম্বুজ বিশিষ্ট সমাধি

শাহ রহমাতুল্লাহ মাজার 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় ছোট সোনামসজিদ থেকে মাত্র আধা কিলোমিটার দূরে তোয়াখানা কমপ্লেক্সে অবস্থিত সহজ মাজার মুঘল স্থাপত্যের একটি প্রাচীন নির্দেশন হিসেবে সুপরিচিত ১৬ শতাব্দীর স্বনামধন্য সাধকদের মধ্যে ৭ সৈয়দ নেয়ামত উল্লাহ অন্যতম তিনি বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম এর বংশধর এবং একাধারে পুরুষরা তো ক্রমিক ওলী আলেম ও অত্যাতিক ছিলেন সুলতান শাহ সুজন রাজত্বকালে তিনি দিল্লির করণীয় থেকে বিভিন্ন স্থান ভ্রমণ করে ফিরোজপুরে রাজমহলে স্থাপিত হন সুলতান এর সাথে অভ্যন্তরা জানিয়ে বায়াত গ্রহণ করেন স্থানীয়ভাবে আস্তানা গড়ে দীর্ঘ ৩৩ বছর সুনামের সাথে ইসলাম প্রচার করেন এক হাজার ৭৫০ হিজরী সনে মারা যাওয়ার পর তাকে এই স্থানে সমাধি করা হয় 

কানসাট আম বাজার 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাকে বলা হয় আমের রাজধানী আর সেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাটে বসে বাংলাদেশের বৃহত্তম আমের বাজার পতি আমের মৌসুমে দেশের এই বৃহৎ আম বাজারে প্রায় শত কোটি টাকার উপরে আমের বেচাকেনা হয় আমের সময় প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমে থাকে এই আম বাজার রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে অনেক আমের বাজার থাকলেও কানসাট আম বাজার পাইকারি বাজারের জন্য অনেক বড় এবং বিখ্যাত এ যেন এক আমের রাজ্য আমরা বাজার ঘুরে দেখার সাথে সাথে আপনি চাইলে কিনে খেতে পারবেন নানা রকম কিনে নিতে পারবেন নিজের জন্য আম পরিপক্ক হওয়ার পথ থেকে মূলত এই বাজারে আম আসা শুরু করে সাধারণত মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত কনসার্ট আম বাজারে আমি ভরে থাকে তবে জুন মাসের পুরো সময় মূলত সবচেয়ে বেশি জমজমাট থাকে 

দারাসবাড়ি মসজিদ 

দারাজ বাড়ি মসজিদ চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের অমরপুর নামক স্থানের কাছে অবস্থিত স্থানীয় বাসিন্দারা এ মসজিদের স্থান থেকে দারাজ বাড়ি নামে চেনে মসজিদের শিলালিপি থেকে পাওয়া তথ্য মতে ১৪৯৭ সালের সুলতান শামসুদ্দিন ইউসুফের শাসনামলে দারাজ বাড়ি মসজিদ নির্মাণ করা হয় মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা পর মানুষের মুখোমুখি মসজিদ নামটি পরিচিত হয়ে ওঠে এরা কোথায় ইট দিয়ে তৈরি মসজিদটির সাথে ভারতের চামচিকা মসজিদের অনেক সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায় মসজিদের ভিতরে আয়তক্ষেত্রের দুই ভাগে বিভক্ত এবং এর মূল গম্বুজটি দেখতে অনেক আকর্ষণীয় দারাজ বাড়ির মসজিদের দৈর্ঘ্য ৯৯ ফুট ৫ ইঞ্চি ও পোস্ত ৩৪ ফুট ৯ ইঞ্চি এবং মসজিদের পূর্ব দিকে 10 ফুট সাত ইঞ্চি লম্বা একটি বারান্দা রয়েছে মসজিদে মসজিদে মোট ৯টি কারুকার্যময় মেহরাব রয়েছে আর মসজিদের উত্তর দিকে রয়েছে প্রায় ৭ বিঘা আয়তনের একটি বিশাল দিঘী ঐতিহাসিক দালাল মসজিদ থেকে প্রাপ্ত তোগরা অক্ষরে উত্তীর্ণ ইউসুফী শাহী জিপিটি বর্তমানে কলকাতা জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে 

রংপুর নওদা বুরুজ 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে গোমস্তাপুর উপজেলা রহনপুরে প্রাচীন ইতিহাস সমৃদ্ধ নবতাব্রুজ অবস্থিত দূর থেকে নওদা পুরুষ দেখতে অনেকটা মাটির উঁচু টিভির মতো রাজধানীতে কাছে ষাটগুরুজ পরিচিত তবে এই অট্টালিকার প্রকৃত নাম শাহরুজ শাহ শব্দের অর্থ বাদশা ও গুরু শব্দের অর্থ অট্টালিকা ইতিহাস বিখ্যাত নদীয়া অঞ্চলের কাছে হওয়ায় এই স্থানটির নওদা নামে পরিচিত লাভ করে 

বাবুইড্যাং 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে যেলিম ইউনিয়নে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় পাহাড়ি বনভূমিতে বাবুইডাঙ পিকনিক স্পট অবস্থিত রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার কিছু অংশ নিয়ে প্রায় ৩১১ জায়গা জুড়ে বরেন্দ্র অঞ্চলের এই পাহাড় বনভূমি অবস্থিত গোল চত্বর থেকে পূর্ব দিকে ঘুরে ওঠা হিসেবে পরিচিত এই চত্ব থেকে নিচে তাকালেই নজর পড়বে পর্যটকদের মুগ্ধ করার মত ঢেউ খেলানো অদ্ভুত সুন্দরবন এই বোন পেরিয়ে সামনে আড়ালে কাছাকাছি থাকা যা না অজানা বিভিন্ন পাখি ও বেশ কিছু মনোরম ঝর্ণার দেখা মিলবে এছাড়া বনের মাঝে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা আড়াই কিলোমিটার নির্মাণ করা হয়েছে এই ড্রামের মাধ্যমে লেকের পানি ব্যবহার করে জমিতে শেষ দেওয়া হয় প্রবাল বেগে প্রবাহিত এর গ্রামের পানি দূর থেকে দেখলে অনেকটাই ঝর্ণার মত দেখায় এ ড্রাম পার হয়ে দুই পাশে ঘাসের মাছ দিয়ে হেঁটে বাবুর ড্যাংক পিকনিক স্পটে যেতে হয় 

বিশিষ্ট মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের সমাধি 

যাবেনা কোন জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় সাহাপুর ইউনিয়নে ছোট সহ মসজিদ প্রাঙ্গনে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের মধ্যে অন্যতম শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর বরিশালের রহমতগঞ্জ গ্রামে জন্মগ্রহণ করা বাংলার এই বিশ্ব সন্তান 1971 সালে মহানন্দা নদীর কাছে শত্রুর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করাকালীন প্রতিপক্ষ শত্রুর শহীদ হন ঢাকা সেনানিবাসের নামকরণ করা হয়েছে মহান এই বীরশ্রেষ্ঠ সম্মানিত 

1971 সালে হানাদার বাহিনী নৃশংস ও ধ্বংসযজ্ঞ ও পাশবিক অত্যাচারের ক্লান্তি লগ্নে ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর পার্বত্য সীমান্ত রক্ষীদের দৃষ্টি এড়িয়ে সিয়াল কোড সীমান্ত থেকে ভারত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন সেই সময় তিনি স্বাধীন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্দেশে রাজশাহী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত এলাকার ৭ নম্বর সেক্টরের মুক্তি বাহিনীর অধিনায়ক হিসেবে কাজ করেছিলেন। 

মন্তব্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ঐতিহাসিক স্থানীয় স্থান 

যেকোনো পর্যটন স্থান আমাদের দেশের সম্পদ প্রাকৃতিক ও সৌন্দর্যের মতো ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন অন্যদেরকে উৎসাহিত করুন দেশ আমাদের দেশের সকল কিছুই প্রতি যত্নবান হওয়া দায়িত্ব আমাদের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ঐতিহাসিক স্থানগুলো সম্পর্কে কিছু জানালাম এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই জানাবেন কোন ভুল হলে ক্ষমা করবেন ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন 



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বৃষ্টি ২৪ নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url